রবিবার, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
spot_img
বাড়িসারা বাংলাযশোরে ক্লুলেস কেশবপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মটরসাইকেল চালক রাসেল হত্যার রহস্য উদঘাটন...

যশোরে ক্লুলেস কেশবপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মটরসাইকেল চালক রাসেল হত্যার রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার-২, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্বার।

গত ইং ১৭/০৮/২০২১ তারিখ সকাল ১০ টার সময় কেশবপুর থানাধীন সাগড়দাড়ি চিংড়া পূর্বপাড়া গ্রামের চিংড়া হতে শ্রীপুরগামী (ঢেপার মাঠ) কাঁচা রাস্তার পাশে জনৈক আয়সা বেগমের ধানক্ষেত থেকে রাসেল হোসেন (২৬), পিতা- মাজিদ মোড়ল, সাং-সাবদিয়া, থানা-কেশবপুর, জেলা-যশোর নামের একজন ভাড়ায় মটরসাইকেল চালক এর লাশ উদ্ধার করে কেশবপুর থানা পুলিশ। জানা যায়, নিহত রাসেল ভাড়ায় মটরসাইকেল চালাতো। ইং ১৬/০৮/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ৪টার সময় ভাড়ায় মটরসাইকেল চালানোর জন্য বাড়ী থেকে বের হয়ে কেশবপুরের উদ্দেশ্যে যায় রাসেল। রাত আনুমানিক ১২ টার সময় রাসেলের মোবাইলে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ইং-১৭/০৮/২০২১ তারিখ রাত অনুমান ০২:৩০ টার সময় ঘোপসানা রোড থেকে ভিকটিম রাসেলের মটরসাইকেলটি পাওয়া গেলেও তাকে পাওয়া যায় না। পরের দিন সকালে লোক মারফত রাসেলের পরিবার জানতে পারেন চিংড়া ডেপার মাঠে একজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাসেলের মৃতদেহ সনাক্ত করে তার পরিবারের লোকজন। এই সংক্রান্তে নিহত রাসেলের পিতা মাজিদ মোড়ল বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় এজাহার দায়ের করলে কেশবপুর থানার মামলা নং-০৩, তাং-১৭/০৮/২০২১ তারিখ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় তদন্তভার ন্যাস্ত করেন। ডিবি’র অফিসার ইনচার্জ জনাব রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর দিক-নির্দেশনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে গোপন তথ্য সংগ্রহ আসামীদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।

গতকাল ৩০ তাং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক শাহীনুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন ও এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিম কেশবপুর থানাধীন হাসানপুর, বিষ্ণপুর, সাগরদাড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যার সাথে জড়িত সন্ধেহে ০২ জন যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এবং তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, হত্যাকাজে ব্যবহৃত ১টি চাকু উদ্বার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আর্থিকভাবে লোভের কারনে গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ হোসেন, ও অহিদ হাসান ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। এরপর তারা ইং ১৬/০৮/২০২১ তারিখ ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে চাকু নিয়ে কেশবপুর দিয়ে খুলনায় যায়। সেখানে ছিনতাই করতে না পারায় রাত অনুমান ১১টার সময় খুলনা থেকে ট্রাকে করে চুকনগর আসে। তারপর নিহত মটরসাইকেল চালক রাসেলকে তিনশ টাকা ভাড়া চুক্তিতে সাগরদাড়ির উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে মামলার ঘটনাস্থল চিংড়া ঢেপার মাঠের মধ্যে নিরিবিলি জনমানব শুন্য এলাকায় নিয়ে নিহত রাসেলকে চাকু দিয়ে ভয় দেখায়ে মটরসাইকেলটি ছিনতাই করতে চায়। রাসেল বাঁধা দেওয়ার একপর্যায়ে চাকু দ্বারা পেটে আঘাত করে। নিহত রাসেল মোবাইল ফোনে বাচ্চার ছবি দেখিয়ে জীবন ভিক্ষা চাইলেও ঘাতক মাসুদ ও অহিদ তাকে জীবনে বাঁচতে না দিয়ে উপর্জুপুরি ছুরি দিয়ে আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গলার শ্বাসনালী কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে মটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। কিন্তু ঘাতকরা হত্যার কথা চিন্তা করে মটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে ৫/৬ কিলোমিটার দূরে ঘোপসানা রোডে ফেলে দেয় এবং অনুমান ১০/১৫ দিন পর ভিকটিম রাসেলের মোবাইল ফোনটি হাসানপুর বাজারে ১টি মুদি দোকানদার শহিদুলের নিকট ৩০০০/- টাকায় বিক্রি করে মর্মে তথ্য প্রমান পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো মোঃ মাসুদ হোসেন (১৯), পিতা- আব্দুর রহমান সরদার, সাং- হাসানপুর, মোঃ অহিদ হাসান (১৯), পিতা- আব্দুর রউফ মোড়ল, সাং-বিষ্ণপুর, উভয়থানা-কেশবপুর, জেলা-যশোর।

খন্দকার তরিকুল ইসলাম
যশোর।

প্রিয় পাঠক, স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিও আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, cbnnews04@gmail.com ঠিকানায়। অথবা যুক্ত হতে পারেন chinabanglanews আমাদের ফেসবুক পেজে। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

এই বিভাগের আরও খবর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

আমাদের লাইক পেজ

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় পোস্ট