


পিলাফ থিয়ানশান পর্বতমালার উত্তর ও দক্ষিণের প্রায় পুরোটাজুড়েই খাওয়া হয়। মাটন দিয়ে পিলাফ তৈরির পাশাপাশি গরুর মাংস, মুরগি, স্নো চিকেন, ইয়াকের মাংস, উটের মাংস ইত্যাদিও পিলাফ তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনকি কিছু পিলাফ রয়েছে যেগুলোতে মাংস থাকে না, তবে এর পরিবর্তে শুকনো ফল যেমন কিশমিশ, শুকনো এপ্রিকট এবং শুকনো তরমুজ ব্যবহার করা হয়, যাকে মিষ্টি পিলাফ বা নিরামিষ পিলাফ বলা হয়। অঞ্চল ও জীবনযাপনের অভ্যাসের পার্থক্যের কারণে, দক্ষিণ সিনচিয়াং ও উত্তর সিনচিয়াংয়ের পিলাফ রান্না উপায় আলাদা এবং সেখানে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন পিলাফ রান্না করা হয়।
গ্রীষ্ম ও শরত্কালে, উইগুরদের পিলাফ খাওয়ার আরও উপায় রয়েছে। দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের উইগুররা পিলাফে ‘পি ইয়ে’ অথবা আপেল ব্যবহার করে করে, যাতে পিলাফে হালকা ফলের সুগন্ধ থাকে। কেউ কেউ পিলাফে ভার্মিসেলি, বাঁধাকপি, টমেটো, গোলমরিচ ইত্যাদি মেশান, যাকে ‘ছাই পু লাও’ বলা হয়। সবজিযুক্ত পিলাফ পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। পিলাফের সাথে দই মিশিয়ে খেতে উইগুররা পছন্দ করে। এভাবে অনন্য স্বাদ পাওয়া যায়। পিলাফ গ্রীষ্মের তাপ উপশমের জন্য একটি আদর্শ খাবারও বটে।
ডিম পিলাফ নামে এক ধরণের পিলাফও রয়েছে। পিলাফ রান্নার পর একটি ডিমের আকারের গর্ত করে সেখানে একটি ডিম ফেটে কুসমসহ সাদা অংশ ঢেলে দেওয়া হয়। রান্না হয়ে গেছে ডিম চালের দানা দিয়ে আবৃত থাকে, যার স্বাদ খুব সুগন্ধযুক্ত।
বিশিষ্ট অতিথিদের আপ্যায়ন করার জন্য বিশেষ পিলাফ রান্নার নিয়ম আছে। পিলাফের প্রতিটি পাত্রে মাংসের পুর দেওয়া বান রাখা হয়, যা ‘পিলাফ বান’ নামে পরিচিত। পিলাফ ও পিলাফ বান উইগুরদের প্রথম শ্রেণীর খাবার। বিশিষ্ট অতিথি, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা এলে তাদের আপ্যায়নের জন্য মেজবান এই ধরনের খাবার রান্না করেন। এটি সৌজন্যমূলক এবং মার্জিত সামাজিকতার বহিঃপ্রকাশ।
লেখিকা: ওয়াং হাইমান (ঊর্মি)
সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ
চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং চীন।