সিনচিয়াংয়ে নাং-এর একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা চীনের অনেক ঐতিহাসিক উপকরণে লিপিবদ্ধ আছে। সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের তুর্পানে থাং রাজবংশ আমলে (৬১৮-৯০৭) ‘নান’-এর অস্তিত্বের কথা জানা যায়। যাদুঘরে এর প্রমাণ সংরক্ষিত আছে। তুর্পানের লোকেরা হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে সূক্ষ্ম ও সুস্বাদু নান তৈরি করতে জানত।
চীনের অনেক প্রাচীন বিখ্যাত কবি তাদের কবিতায় নানের কথা উল্লেখ করেছেন। পাই চু ই এবং চিয়া সি সিয়েসহ কয়েকজন বিখ্যাত কবির লেখায় নানের উল্লেখ আছে। সিনচিয়াংয়ে একটি জিঙ্গেল আছে যা এইরকম: ‘আপনি যদি একদিন নান না খান, তবে বিরক্ত বোধ করবেন; আপনি যদি দুই দিন নান না খান, তবে আপনার পা তুষের মতো মনে হবে; যদি আপনি পাঁচ দিন নান না খান, তবে আপনি মাঝা (সমাধি) রাজার পূজা করবেন’। এতে দেখা যায়, সিনচিয়াংয়ের জনগণের জীবনে নান কতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রাচীন আমলে গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা সাধারণত গাধার গাড়িতে বা পায়ে হেঁটে দূরের ক্ষেতে যেতেন। দুপুরের খাবারের জন্য বাড়ি যেতে তাদের অসুবিধা হতো। তাই তারা সঙ্গে নান নিয়ে যেতেন, দুপুরের খাবার হিসেবে। খাওয়ার আগে কৃষকরা শক্ত নান থিয়ান শান পর্বতমালার গভীর থেকে প্রবাহিত নালার বিশুদ্ধ পানিতে চুবিয়ে রাখতেন। নান নরম হয়ে ফুলে ওঠার আগ পর্যন্ত তারা পপলার গাছের নীচে বসে বিশ্রাম নিতেন, আড্ডা দিতেন। শুকনো নান পানির প্রভাবে নরম হবার পর তা খাওয়ার উপযুক্ত হতো। নানের সাথে তারা আরও খেতেন কাচা খাওয়ার যোগ্য শাকসবজি, তরমুজ, বা অন্যান্য ফলমূল। খাওয়ার পর তারা খানিকটা সময় কাটাতেন গাছের ছায়ায় গান গেয়ে।
লেখিকা: ওয়াং হাইমান (ঊর্মি)
সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ
চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং চীন।
Leave a Reply