


আফিম যুদ্ধের পর, তত্কালীন জারবাদী রাশিয়া তার ভৌগোলিক সুবিধার সদ্ব্যবহার করে এবং মধ্য-এশিয়াকে সংযুক্ত করার পর চীনের সিনচিয়াংয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বাড়িয়ে দেয়। ১৮৫১ সালে ‘চীন-রাশিয়া ইটা বাণিজ্যিক সনদ’ স্বাক্ষরিত হয়, এবং জারবাদী রাশিয়া একতরফাভাবে কনস্যুলেট স্থাপন ও সিনচিয়াংয়ে বাণিজ্য অব্যাহতি দেওয়ার বিশেষাধিকার লাভ করে। ১৮৬৪ সালে ‘চীন-রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের বিভাগ’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে জারবাদী রাশিয়া চীনের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের ৪ লাখ ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিজের ভুখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করে নেয়। ১৮৭১ সালে জারবাদী রাশিয়া চীনের ইলি অঞ্চল আক্রমণ করে এবং দখল করে। ১৮৭৫ সালে জুও জুং থাংয়ের নেতৃত্বে ছিং রাজবংশের বাহিনী সিনচিয়াং পুনরুদ্ধার করে। এক বছর ৬ মাসের মধ্যে সিনচিয়াংয়ের দক্ষিণাঞ্চলও পুনরুদ্ধার হয়। ১৮৮১ সালে ‘চীন-রাশিয়া ইলি চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। ১৮৮২ সালে ইলি আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের অধীনে ফিরে আসে। এর ফলে সিনচিয়াং পুনরায় ছিং রাজবংশের ব্যবস্থাপনায় ফিরে আসে।
প্রশাসনব্যবস্থা জোরদার করতে, ১৮৮৪ সালে, সিনচিয়াং প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করে ছিং রাজবংশের সরকার। এ থেকে মূল ভূভাগের সঙ্গে সিনচিয়াংয়ের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ দিন দিন ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হতে থাকে।
১৯১২ সালে রিপাবলিক অফ চায়না প্রতিষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের অস্থায়ী সরকার সিনচিয়াংয়ের ‘সুন ফুকে’ ‘তুতু’ নামে পরিবর্তিত করে।
১৯৪৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর চীনের কেন্দ্রীয় গণসরকারের অনুমোদনে, সিনচিয়াং গণসরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর, সমতা, ঐক্য ও পারস্পরিক সহায়তার ওপর ভিত্তি করে, একটি নতুন ধরনের জাতিগত সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ‘চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের যৌথ ঘোষণা’-র বিধান অনুসারে, সিনচিয়াংয়ে জাতিগত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা চালু হয়। ১৯৫৫ সালের পয়লা অক্টোবর সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে সিনচিয়াং সমৃদ্ধির পথে যাত্রা শুরু করে।
লেখিকা: ওয়াং হাইমান (ঊর্মি)
সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ
চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং চীন।