


মোঃ ছিদ্দিক ভোলা প্রতিনিধি
আগে তেলের দাম ৬৫ টাকা ছিল। এখন তেলের দাম ৯০ টাকা। ৮ লিটার তেল কিনে নদীতে গেছি ৫জন জেলেকে নিয়ে। সারা দিন নদীতে জাল পেতে এক হাজার টাকার মাছ পেয়েছি। দোকানে চায়ের খরচ হযেছে ২০০ টাকা। কিন্তু ৮ লিটার তেল কিনেছি ৬০০ টাকা দিয়ে। সব খরচ দিয়ে ৫জন জেলে ২০০ টাকা ভাগ করে নিয়েছি। আমরা কি না খেয়ে মরবো? আমার যে ধার-দেনা আছে সেটি এখনও পরিশোধ করতে পারিনি। সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে চলেছি। এখনও নদীতে তেমন মাছ নেই। যা পাই তেলের খরচও উঠে না। এমন অবস্থায় পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আল্লাহর দিকে তাকানো ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই। এভাবে ক্ষোভ ও আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন দৌলতখান উপজেলার পাতারখাল এলাকার জেলে সফিক মাঝি বলেন, ‘একে তো নদীতে তেমন মাছ নেই। তার উপর তেলের দাম দিনদিন এভাবে বাড়লে আমরা কীভাবে নদীতে যাবো? দিনদিন লোকসান গুনতে গুনতে কিছুদিন পর আমাদের ট্রলার বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’ এমন অবস্থা দৌলতখানের জেলে মামুন, সিরাজ ও রুহুল আমিনসহ হাজারো জেলেদের।
দৌলতখানের মৎস্য ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন আলী জানান, এবার মৌসুমের শুরু থেকেই দৌলতখানের মেঘনা নদীতে তেমন মাছ নেই। এতে জেলেরা অনেকটা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এখন নতুন করে তেলের দাম বাড়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। দিনদিন জেলেদের উপর ঋণের বোঝা ভারী হওয়ায় অনেক জেলে মাছ শিকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
জানা যায়, দৌলতখান উপজেলার ৩০ হাজারেরও বেশি জেলের জীবিকা নির্বাহ হয় নদী ও সাগর মোহনায় মাছ শিকার করে। তাদের সব নৌকা ও ট্রলার ডিজেলের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় তারা মাছ ধরে খরচ পুষিয়ে উঠতে পারছেন না। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অনেকটা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হাছনাইন জানান, দৌলতখানে উপজেলায় ২১ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন অনিবন্ধিত আরও কয়েক হাজার জেলে। নদীতে মাছ শিকার করে তাদের সংসার চলে। বর্তমানে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।