মোঃ মোশাররফ হোসেন
প্রিয়, তোমাকে খুব মিস করি,এখনো প্রতি দিন তোমার পুরোন চিঠি বুকে ধারণ করি,চোখে জল আসে। কিছু পুরোনো দিন মনে করি….সেই বাতাসের গতিতে ফিরে আসা নদীর কাছে, তোমাকে দেখার জন্য আমর অনশন, আমার পিপাসার্ত বুক । যেখানে সমাজের সুশীলরা একটি নরম মাংসের স্বপ্ন দেখেছে, সফেদ যোনীর আশায় তৃষ্ণার্ত হয়ে বুক ফেটে চৌচির গেছে । প্রিয় শোনো, আমি এক খসে পড়া উল্কা, যাঁর খোঁজ পৃথিবীর খুব স্বল্প লোক-ই জানে । যেখানে মানুষ একটা নরম মাংসপিণ্ড দেখে, চোখ লকলক করে ওঠে যোনীর গঠন দেখে; অথচ আমি দেখি একটা শিমুল তুলো । শুভ্র, নির্মল, নরম । যেখানে আমার প্রার্থনায় গড়ে উঠেছে একটা ছোট্ট উপাসনালয় । প্রিয়তমা শোনো, এই পৃথিবী প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য সুযোগ্য আবাসভূমি হয়নি।
প্রেমিক-প্রেমিকা বসে থাকবে ম্যাগনোলিয়া গাছের নিচে । প্রিয়তমা শোনো, আমি এ জন্মে পাখি হতে চেয়েছিলাম হয়তোবা কোনো ফুড়ুৎ করে উড়ে এসে তোমার ঘাড়ে এসে বসা । হয়তোবা কোনো ভোরের ম্যাগপাই, যে প্রতিদিন তোমাকে গান শুনিয়ে যায় । যখনই দেখলাম শহরে বেড়ে গেছে এয়ারগান, তেমনি উবে গেলো আমার ইচ্ছের । প্রিয়তমা…
রাজনৈতিক অস্থিরতা, খুন-ধর্ষণের ছবি প্রতিদিন ছাপা হচ্ছে । আমাদের কথা কবে ছাপা হলো, বলো? প্রিয়তমা শোনো, মানুষের মৃত্যু দেখে মানুষকে যা নাড়া দেয়নি, তাঁর থেকেও বেশি নাড়া দিয়েছে আমাদের প্রতিটি চুম্বনে । রাস্তার স্ট্রিটলাইটগুলো থরথর করে কেঁপেছে, কেন এত প্রেম; ভেঙে দাও—ভেঙে দাও ।
যেই শেয়ার বাজারের হিসেবনিকেশ করে মানুষ বেচে দিচ্ছে নিজেকে, সেখানে আমি-তুমি এক সস্তা পন্য । আমরা বিক্রি হয়ে যাচ্ছি কর্পোরেট ওয়াল্ডে । শিক্ষকরাও মাথায় গুঁজে দিচ্ছেন কসথিটা, সাইনথিটা, ডেবিট, ক্রেডিট । তাঁরাও চান আমরাও হিসেবের ছোটোখাটো মেশিন হয়ে বাঁচি । এসব হিসেবের গড়মিলে তো প্রেমিক-প্রেমিকা নেই । মানুষ বলেছে পাগল, অথচ প্রেম বুঝতে চায়নি ।
প্রিয়তমা শোনো, আমাকেও বলা হলো একটা সুদর্শন রোবটের মতো আমিও যদি হতাম তাঁদের মতো । যাকে কমান্ড করলেই তড়িৎগতিতে কাজ করে দিতে পারে । অথচ ওরা আমাদের প্রতিটি স্পর্শ বুঝতে চায়নি । তোমার প্রতিটি চুমুর অভাবে আমার ভেঙে পড়া । তোমার কামনায় ধ্বংসস্তূপের একটি ভাগাড় গড়ে উঠেছে । প্রিয়তমা, সেখানেও গড়ে উঠেছে ছোট্ট ছোট্ট ঘাসফুল । যেই ঘাসফুলের সৌন্দর্যে তুমি মুগ্ধ হও, হাত বোলাও…
প্রিয়, তুমি কি সেই বাধ্য হওয়া লাইকা নামক কুকুরের খোঁজ রেখেছিলে? যে মরেছে একজন প্রেমিকের মতো । বারবার চিৎকার করে বলেছে, আমি ভালোবাসি; আমাকে ভালোবাসতে দাও; আমাকে বাঁচতে দাও । মরেছি তোমার পথে কতব।
ঢাকা, বাংলাদেশ
Leave a Reply