ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনে বিশ্বের অনেক দেশের নাগরিক বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু ঝুঁকির বিবেচনায় বৈধতার প্রশ্নে এখনও অস্পষ্টতা বেশিরভাগ দেশেই। কারণ এ ধরনের ডিজিটাল মুদ্রার মান খুব বেশি উঠানামা করে। মালিকানারও নেই ভৌগলিক সীমা। তবে এ সব সত্ত্বেও মধ্য আমেরিকার এল সালভাদর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিটকয়েনের লেনদেনকে বৈধতা দিয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে ব্যবসা বাণিজ্যের যেসব জায়গায় বিতর্কিত এ মুদ্রা গ্রহণের সুযোগ থাকবে সেখানেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তা নিতে বাধ্য থাকবে। লাখ লাখ মানুষ এখন দেশটির সরকারের নতুন ডিজিটাল ওয়ালেট অ্যাপটি ডাউনলোডের অপেক্ষায় আছে। যেখানে প্রত্যেক নাগরিককে ৩০ ডলার সমমূল্যের বিটকয়েন উপহার দেওয়া হবে।
বিটকয়েন ব্যবহারে আগ্রহী বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ এই ৩০ ডলার সমমূল্যের ডিজিটাল মুদ্রা কিনছে। নিজেদের সমর্থনের পাশাপাশি অস্থিতিশীল এ মুদ্রার মান বাড়াতেই তারা এটি করছে।
সালভাদরের নাগরিক, ট্যাক্সি চালক ড্যানিয়েল বিটকয়েনের অনুমোদনে খুবই উচ্ছ্বসিত। তবে দামের ওঠানামার কারণে তার আয়ের স্থিতিশীলতা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগও আছে। তিনি বলেন, আমি গত প্রায় দুই মাস ধরে বিটকয়েন গ্রহণ করছি। যখন আমি জানতে পারি এটার অনুমোদন দেওয়া হবে। বিমানবন্দর পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যাওয়ার ভাড়া হিসেবে আমাকে একজন ৪০ ডলারের বিটকয়েন দেয়। সবমিলিয়ে ১০ শতাংশ যাত্রী এখন বিটকয়েনে ভাড়া দিতে চায়।ড্যানিয়েল বলেন, বিটকয়েনকে ডলারে বিনিময় করতে চাইলে ১০ শতাংশের মতো খরচ হয়। একারণে তিনি এ ক্রিপ্টোকারেন্সি সঞ্চয় হিসেবে রাখছেন। তিনি আশা করেন, তার ওয়ালেটে ১ হাজার ডলারের বিটকয়েন জমা হবে অল্পদিনের মধ্যেই। তবে তিনি কিছুটা শঙ্কিত যে বিটকয়েনের মান না পড়ে যায়।
পরিসংখ্যান বলছে, গতবছর বিশ্ববাজারে বিটকয়েনের দাম খুব ওঠানামা করেছে। গতবছরে সেপ্টেম্বরে ১ বিটকয়েনের দাম প্রায় ১০ হাজার ডলার থেকে শুরু করে তা চলতি বছরের এপ্রিলে সর্বোচ্চ ৬৩ হাজার ডলারে পৌঁছায়। কিন্তু জুলাই মাসেই তা আবার ৩০ হাজার ডলারে নেমে যায়। বর্তমানে প্রতি বিটকয়েন বিক্রি হচ্ছে ৫১ হাজার ডলারের কাছাকাছি।
সম্প্রতি বিটকয়েনের দামের এ ঊর্ধ্বগতি মূলত এল সালভাদরের নয়া নীতির সাথে যুক্ত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিটকয়েনের বিখ্যাত প্লাটফরম রেডডিটের পেজে একটা ভাইরাল পোস্ট দেখা যায়।
ত্রিশ লাখ ফলোয়ারের ওই পেজে দেখা যায়, তারা লিখেছেন, মঙ্গলবার তাহলে আমরা সবাই ৩০ ডলারের বিটকয়েন কিনছি! সম্প্রতি সেন্ট্রাল আমেরিকান ইউনিভার্সিটির (ইউসিএ) এক জরিপে দেখা যায়, ১২৮১ জনের মধ্যে মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বিটকয়েন সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে। ৬৮ শতাংশের বেশি মানুষ লেনদেনের বৈধ মাধ্যম হিসেবে বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সির বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন।
সুত্র ; সময় নিউজ
Leave a Reply