


বিশেষ প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সাময়িক বহিস্কৃত সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছে। একের পর এক বেড়াল বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে।
এপর্যন্ত পাওয়া অভিযোগগুলো হল- ২০১৭ সালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার, ২০১৮ সালে তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোসাহেদুল ইসলাম সাদি’র সাথে বেয়াদবি এবং গণপিটুনির শিকার হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত, ২০২০ইং সালে বিশ্ববদ্যালয়ের ২য় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতির পতাকা চুরি, চাকরির প্রলোভনে টাকা আত্মসাৎ মর্মে ২০২১ সালে সাদিয়া আক্তার দোলা নামের এক মহিলার অভিযোগ, এ বছরের ১ সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে ব্যবহৃত বাসে তেল নিয়ে পাম্পের টাকা পরিশোধ না করা, পর্যায়ক্রমে ৩ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা চাঁদাবাজিসহ নির্মাণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির দায়ে পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে একাধিক বার দুর্ব্যবহার, উপাচার্যের বাসভবনে আম চুরি করে ধরা পড়া, পবিপ্রবি’র টিএসসি হলের প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা এবং হল ডাইনিংয়ের বকেয়া পরিশোধ না করা, এক শিক্ষার্থীর লাপটপ আটকানোসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণেরও অভিযোগ রয়েছে সাগরের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি, এক ছাত্রীর সাথে সম্পর্ক থাকায় গভীর রাতে সেই ছাত্রীকে হলে রেখে আসতে গেটে এলে ইউনুস আলী নামের এক কর্মচারী বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনুস আলীকে মারধর করেন সাগর।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কর্মচারী ইউনুস আলী বলেন, অনেক রাত্র হওয়ায় আমি তাদের(সাগর ও ওই ছাত্রী) হলের নিয়ম অনুযায়ী ঢুকতে বলি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করেন।
অভিযোগ করে তেলের পাম্প ম্যানেজার জামাল বলেন,” সমাবেশের দিন ৩৩ হাজার টাকার তেল নেয় সাগর। কিন্ত সে টাকা পরিশোধ না করেই তিনি চলে যায়। পরে একাধিকবার টাকা পাওয়ার চেষ্টা করা হলেও আজও পাওয়া যায় নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক মোঃ আসিফ ইকবাল অনিক সম্পর্কে সাগর এর দুলাভাই, যাঁর মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে
সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন। এবারও সেই দুলা ভাইয়ের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে সাময়িক বহিস্কারাদেশ উঠিয়ে সভাপতি পদে বহাল থেকে সদর্পে ক্যাম্পাসে আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন সাগর।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন,” এগুলো মিথ্যাও ভিত্তিহিন। ভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। ”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।
কয়েকটি অপরাধের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে, আপরাধের ধরন ও মাত্রা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিবেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত আলোর সময়কে বলেন, ” কয়েকটি তদন্ত কমিটি করেছি, তদন্ত কমিটি রিপোর্ট আসলে শৃঙ্খলা বোর্ডের মাধ্যমে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।”