


নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় লোক দেখানো নিয়োগ বোর্ড গঠন করে আগের বিতর্কিত সেই ৪ প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শনিবার আলালপুর হাজী সেখ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল ১০ টায় নিয়োগ বোর্ড গঠন করে এ নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল। এ নিয়োগ বোর্ডকে কেন্দ্র করে গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রীর একান্ত সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন স্থানীয় শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি। অবশেষে অভিযোগে উল্লেখিত ব্যাক্তিদেরকেই নিয়োগ দেওয়া হলো।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে একটি নিয়োগচক্র কাজ করছে। বিষয়টি জানতে পেরে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে গত মঙ্গলবার ওই এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম খোন্দকার বিভিন্ন দপ্তরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। এখন সেই অভিযোগই সত্য বলে প্রমাণ মিলেছে। অভিযোগের সেই ৪জন প্রার্থীকেই যোগ্য বলে ফলাফল সীটে দেখানো হয়েছে। এ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ইতোমধ্যে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগকারী শহিদুল ইসলাম খোন্দকার বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়ে আলমগীর হোসেনের কাছ থেকে ১০ লাখ, অফিস সহায়ক পদে বেনজির বাদলের কাছ থেকে ১৩ লাখ, নিরাপত্তাকর্মী পদে রায়হান আলীর কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা এবং আয়া পদে সাদিয়া আফরিন রুমানার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকায় চুক্তি করে। পরে সংশ্লিষ্ট সকলকে ম্যানেজ করে এক বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে নিয়োগ দেন প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল। খুব শীঘ্রই এ অবৈধ নিয়োগ বাতিল চেয়ে মামলা করা হবে বলেও তিনি আরো জানান।
আয়া পদের প্রার্থী নাম না বলার শর্তে লিখিত পরীক্ষার পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আগেই আয়া পদে সাদিয়া আফরিন রুমানাকে ৮ লাখ টাকায় চুক্তি করেছেন। আমাদের কেবলই অযথা আসা। আপনি কত লাখ টাকা দিতে চেয়ে ছিলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমি ৫ লক্ষ টাকা দিতে দিয়েছিলাম।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন দপ্তরে দাখিলকৃত অভিযোগের সেই ৪ জনই কেন নিয়োগ বোর্ডের পরীক্ষার ফলাফলে পাস দেখিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে এর কোন সদুত্তর তিনি পারেননি।
এ নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খোদা বক্স মিঞা, ডিজির প্রতিনিধি নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শহীদুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহ্ আলম, কালীগ্রাম দোডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছার রহমান ও সদস্য সচিব ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহ্ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ৪ পদে নিয়োগের জন্য লিখিত ও ভাইভা বোর্ডের ফলাফলের ভিত্তিতে ৪ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। টাকা লেনদেনের কোন তথ্য আমার জানা নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।