বুধবার, অক্টোবর ৪, ২০২৩
spot_img
বাড়িআন্তর্জাতিকচীন-মার্কিন আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা প্রসঙ্গ

চীন-মার্কিন আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা প্রসঙ্গ

অক্টোবর ২৯: গত ২৭ অক্টোবর মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো বেইজিংয়ে চার দিনব্যাপী সফর শুরু করেন। এ সফর স্বাভাবিকভাবেই বিদেশী সংবাদমাধ্যমে যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’, ‘নিউইয়র্ক টাইমস’, ‘ব্লুমবার্গ’সহ বিভিন্ন প্রভাবশালী গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশিত হয়।
গণমাধ্যমে এবারের সফরকে ‘চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েনের সমাধান এবং দু’দেশের সার্বিক সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখার’ সুযোগ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বস্তুত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক হচ্ছে দু’দেশের সম্পর্কের মূল অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, এক্ষেত্রে আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা চালানো, যাতে দু’দেশের সম্পর্ক, বিশেষ করে চীন-মার্কিন আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনা যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু’দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে ও হচ্ছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চীন-বিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ওয়াশিংটন। উদাহরণস্বরূপ সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের কথা উল্লেখ করা যায়। যুক্তরাষ্ট্র এ খাতে একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব লক্ষণীয়। দু’দেশের বাণিজ্যের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমনি এক প্রেক্ষাপটে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা চীন সফরে এলেন। তিনি হচ্ছেন জুনের পর থেকে চীন সফর করা চতুর্থ মার্কিন কর্মকর্তা এবং সাত বছরে চীন সফরকারী প্রথম মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক কাঠামোতে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, ও বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয় দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যনীতি প্রণয়ন ও তত্ত্বাবধানের জন্য দায়ী। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের সিনিয়র ফেলো গ্যারি হাফবাউয়ার বলেছেন, রাইমন্ডো ‘পণ্য বা পরিষেবার বাণিজ্য, বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রনিক পরিষেবা, প্রযুক্তির প্রবাহ, এবং বিনিয়োগ’ সম্পর্কিত লেনদেনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জিনাকে চীন সফরে পাঠিয়ে আপাতদৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরবিরোধী সংকেত দিচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন।
যুক্তরাষ্ট্র এখনও চীনের সাথে উচ্চ প্রযুক্তির আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা সীমাবদ্ধ রাখতে নিত্যনতুন নীতিমালা গ্রহণ করেই যাচ্ছে। গত ৯ অক্টোবর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন চীনের সেমিকন্ডাক্টর ও মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স, কোয়ান্টাম তথ্য প্রযুক্তি, ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বিনিয়োগে মার্কিন সংস্থাগুলোকে সীমা নির্ধারণ করে দিতে একটি বিদেশী বিনিয়োগ পর্যালোচনা প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।
চীনে উচ্চ প্রযুক্তি খাতে মার্কিন বিনিয়োগ আরও কমানোর পাশাপাশি, এ সিদ্ধান্ত অন্যান্য ক্ষেত্রে চীনে বিনিয়োগের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এদিকে, রাইমন্ডোর চীন সফরের ঘোষণার পরপরই, ইউএস হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের ‘চীন ইস্যু সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির’ চেয়ারম্যান ও রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক গ্যালাঘে রাইমন্ডোর কী করা উচিত কী করা উচিত নয়, তার সবক দিয়ে বসেন।
তবে, মার্কিন সরকার এ সফরের মাধ্যমে চীনকে যেন একটি নির্দিষ্ট সদিচ্ছার সংকেত দিতে চায়। যেদিন মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে রাইমন্ডোর চীন সফরের ঘোষণা দেয়, সেদিন মার্কিন সরকার ২৭টি চীনা সত্ত্বাকে তার ‘অযাচাইকৃত তালিকা’ থেকে সরিয়ে দেয়, যা চীনের প্রতি সদিচ্ছার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েন পিন সম্প্রতি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, মার্কিন পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায় যে, উভয় পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে যোগাযোগের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় মতবিরোধ কমাতে পারে।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রীর চীন সফর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদারে কোনো প্রকৃত ইতিবাচক ভূমিকা রাখে কি না, তা-ই এখন দেখার বিষয়।
লেখিকা: ওয়াং হাইমান (ঊর্মি)
সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ
চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং চীন।

প্রিয় পাঠক, স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিও আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, cbnnews04@gmail.com ঠিকানায়। অথবা যুক্ত হতে পারেন chinabanglanews আমাদের ফেসবুক পেজে। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

এই বিভাগের আরও খবর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

আমাদের লাইক পেজ

- Advertisment -spot_img

জনপ্রিয় পোস্ট