


মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা ‘রাজু’ হত্যা মামলার প্রধান আসামি শাহিনুর হোসেন শাহীন (৪০)’কে চট্টগ্রাম মহানগরীর অলংকার মোড় হতে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ঃ৩০ টায় নগরের অলংকার মোড়
এলাকায় ব্যাপক অভিযানে আসামী মোঃ শাহীন হোসেন শাহীন (৪০) কে আটক করতে সক্ষম হয়।
র্যাব সূত্রে জানা যায়।নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজু ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুর নিকট আত্বীয় মোঃ জামাল উদ্দিন ও তার দুই ছেলে আরাফাত ও তারেক পেশায় গরু ব্যবসায়ী ছিলেন। মোঃ জামাল উদ্দিন জনৈক এরশাদের নিকট দুইটি গরুর বাছুর বর্গা দিয়েছিল। গত ০৯ জুলাই সকাল ১০ঃ০০ টার দিকে এরশাদের সংগে শাহীন হোসেনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে শাহীন ও তার দল মিলে নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুর নিকট আত্বীয় মোঃ জামাল উদ্দিনের এরশাদের নিকট বর্গা দেওয়া গরুর বাছুর ০২টি জোরপূর্বক নিয়ে যেতে চেষ্ঠা করে। তখন গরুর আসল মালিক মোঃ জামাল উদ্দিন ও তার দুই ছেলে আরাফাত ও তারেক বাছুর ০২টি না নেওয়ার জন্য বাধা প্রদান করে। সে সময় শাহীন ও তার দল মোঃ জামাল উদ্দিন ও তার দুই ছেলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে অনেক মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
উক্ত বিষয়টি মোঃ জামাল উদ্দিনের ছেলে আরাফাত নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুকে অবগত করে এবং ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। আরাফাতের কথা মত নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজু তৎক্ষনাত তার দুই বন্ধুকে সংঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং শাহীন হোসেন’কে মারধরের কথা জিজ্ঞাসা করলে সাথে সাথে শাহীন ও তার অপর সঙ্গীরা মিলে তাদের হাতে থাকা রাম দা, কিরিচ, ধাড়ালো ছুরি, লোহার রড দিয়ে ইব্রাহিম রাজু শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারী কোপ/আঘাত করতে থাকে। এরুপ উপুর্যোপরী আঘাতের ফলে ইব্রাহিম রাজু গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পরে যায়। তখন শাহীন ও তার অপরাপর সঙ্গীদের হাতে থাকা দেশীয় ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে রাজুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ফেলে ও রড দিয়ে আঘাত করে বাম কাধ, হাত, পা, হাটু ভেঙ্গে দেয়। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে দুস্কুতিকারীরা যাওয়ার সময় ইব্রাহিম রাজু’র ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ইব্রাহিম রাজু’কে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তার বন্ধুদের সহযোগীতায় তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসা জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ বিষয়ে নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজু’র বাবা মাহি উদ্দিন বাদী হয়ে গত ১১ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ চট্টগ্রামের জোড়ারগঞ্জ থানায় ১৬ জন নামীয় এবং ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা করে একটি হত্যা মামলা
এই মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকেই উক্ত নির্মম ও নৃশংস হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত হত্যা কান্ডের মূল পরিকল্পণাকারী ও এজাহারনামীয় ১নং প্রধান আসামী মোঃ শাহীন হোসেন চট্টগ্রাম মহানগরের অলংকার মোড় এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব- আভিযানিক দল আসামী’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামী অকপটে স্বীকার যে, সে উপরে উল্লেখিত ইব্রাহিম রাজু’কে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার মূল পরিকল্পণাকারী ও এজাহারনামীয় ১নং প্রধান পলাতক আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার জোড়ারগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।