মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
সুবর্ণচরে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারী (ভিজিএফ) কার্ডের চাউল চুরির অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুলকালাম।
শনিবার (২১ মে) বিকালে উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার ফারুকের যোগসাজসে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ট্রাক্টর ট্রলি যোগে চল্লিশ বস্তা সরকারী (ভিজিএফ) এর চাউল গায়েব হওয়ার অভিযোগ উঠে।
এ অভিযোগের পেক্ষিতে এলাকার সর্বত্রই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানিয় মোতাহের হোসেন রুবেল ভিডিও সাক্ষাতকারে জানান, শনিবার বিকেলে চরক্লার্ক বাংলা বাজার থেকে মোটরসাইকেল যোগে ছিদ্দিক মার্কেট যাওয়ার পথে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ট্রলি বস্তা ভর্তি চাউল নিয়ে বাহির হয়। পরে খবর নিয়ে জানি এগুলো সরকারি চাউল ছিলো।
পরবর্তীতে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে স্থানিয় বাংলা বাজার একটি দোকানে সিসি টিভির ফুটেজ দেখে বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যায়। চাউল নিয়ে পালিয়ে যাওয়া সেই গাড়ির ড্রাইভার একই ওয়ার্ডের কালা মিয়ার ছেলে দুলাল ড্রাইভার। ঘটনার পর থেকে সেই গাড়ি নিয়ে পলাতক এবং তার ব্যাক্তিগত মোবাইল নাম্বারও বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় ইউপি মেম্বারের সহযোগী আলমগীর হোসেন নামের আরেকজনও পলাতাক রয়েছে। তবে গাড়ির ড্রাইভার ও মালিক দু,জনের নামই দুলাল।
এ বিষয়ে গাড়ির মালিক মো. দুলাল মিকার ভিডিও সাক্ষাতকারে জানান, গত শনিবার ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত আমার ট্রলির ড্রাইভারের সাথে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। বর্তমানে সে কোথায় রয়েছে এখনও সন্ধান পায়নি। ওই দিন থেকে তার মোবাইল বন্ধ। এমনকি আমার গাড়িরও কোনো খোঁজ পায়নি।
ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা জানান, শরিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি ট্রলি বস্তা ভর্তি অবস্থায় ফারুক মেম্বারের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাহির হয়।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ঈদের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী ঈদ উপহার হিসেবে ইউনিয়ন পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ৬ টন ৪০০ কেজি চাল এসেছে। ঈদের পরে ৫০ কেজি ওজনের ১১১ বস্তা প্রায় ৬ টন চাল ইউনিয়ন পরিষদে আসে।
চৌকিদার মো. হেলাল জানান, এবছর সমগ্র ইউনিয়নের চাউল বিতরণের দায়িত্ব এই মেম্বারকে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন চাল রাখার গুদামের চাবি আমার নিকট থাকলেও এই চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে মেম্বার ফারুক আমার থেকে চাবি নিয়ে নেয়। ১ম ধাপের চাল সকলের উপস্থিতিতে বিতরণ করলেও ২য় ধাপের চাল বিতরণে আমাদের কাউকে ডাকা হয়নি। সেই চাউল গুলো কি বিতরণ করেছে না কি করেছে সেটা আমার জানা নেই।
এলাকাবাসীরা জানান, তার খুঁটির জোর কোথায়? এ ঘটনায় প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মোঃ ফারুক জানান, এটি সম্পুন্ন ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, সিসি টিভির ফুটেজে কি দেখা গিয়েছে তার কিছুই তিনি জানেন না। সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের চাপে রহস্যজনক ভাবে তিনি আরো বলেন, চাউল গুলা রোদ্রে শুকানোর জন্য বের করেছি আমি লেবারসহ। তবে ইউপি সচিবকে বার বার কল করেও যুক্ত করা যায়নি।
চরক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল বাসার জানান, আমি জেলা শহর মাইজদী ছিলাম। এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিস্তারিত জেনে প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৈতি সর্ববিদ্যা বলেন, বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমিও দেখেছি তবে কেউ মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলেই অতিদ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply