আশিকুর রহমান,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার খলাপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সরকারি বিধিমালা লঙন করে বিশরপাশা জলমাহাল স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে সাব লীজ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জয়কালী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ দাস, বিশরপাশা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের লিটন দাসসহ চারজন সম্প্রতি সাব লীজ বাতিল করে যথাযথ নিয়মে প্রকৃত মৎস্যজীবিদের মাঝে ইজারা দেয়ার জন্য নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেছেন।
গত মঙ্গলবার সাংবাদিদের বিষয়টি জানানো হয়। অভিযোগকারীরা তদন্ত করে ওই উন্নয়ন প্রকল্পটি বাতিলের দাবি জানিয়ে এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রনালয়ে সচিব, কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা সমবায় কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার সাব লীজ দেয়া বিশরপাশা জলমহাল বাতিলের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসককে গত ২৫ এপ্রিল সুপারিশ করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, কলমাকান্দার ২১৬ একরের বিশরপাশা জলমাহালটি স্থানীয় চারটি মৌজায় অবস্থিত। উপজেলার খলাপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড ১৪২৮-১৪৩৩ বাংলা ছয় বছরের জন্য ইজারা গ্রহন পায়। ওই সমিতির সভাপতি রবীন্দ্র বর্মন ও সাধারণ সম্পাদক মদন বর্মন সরকারি নিয়ম লঙন ও তথ্য গোপন করে উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের মো. সবুজ মিয়া ও চত্রংপুর গ্রামের মো. শামীম মিয়ার কাছে সাব লীজ প্রদান করেন। সরকার থেকে লীজ গ্রহীতা খলাপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সদস্যরা বিশরপাশা জলমহালে থাকেন না এবং মাছ আহরণ করে না।
অন্যদিকে সাব লীজ গ্রহীতা এলাকার প্রভাবশালী সবুজ মিয়া ও শামীম মিয়া নিজেদের জায়গায় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সরকারি জলমহালের জায়গা ভরাট করছে। এতে করে জলমহালের অস্থিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিযোগকারীরা ওই প্রকল্পটি বাতিল করে সরকারি বিধি মোতাবেক ইজারা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানান।
জয়কালী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ দাস বলেন, জলমহাল ইজারা ২০০৯ এর সরকারি নীতিমালা অনুসরণ না করে বিশরপাশা জলমহাল সাব লীজ দেয়া হয়েছে। ইজারা গ্রহীতারা জলমহালে নিজেরা অবস্থান করে না ও মাছ ধরে না। ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিষয়টি এমপি সাহেব ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। খলাপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি রবীন্দ্র বর্মনের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে সাধারণ সম্পাদক মদন বর্মন বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের পক্ষে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে জলমহাল ইজারা নেয়ার সামর্থ নেই। তাই স্থানীয় কিছু লোককে আমাদের সাথে নিয়েছি। অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। সবুজ মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মন্ত্রনালয়ে প্রকল্প দাখিলের জন্য একজন উপদেষ্টা দেখাতে হয়। আমাকে লীজ গ্রহীতারা উপদেষ্টা হিসেবে রেখেছে। আমি ও শামীম সাব লীজ নেই নি। স্থানীয় কিছু লোক জলমহালটি ইজারা নিতে চেয়েছিল্ তারা পায়নি বলে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছে।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply